রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার প্রবাসী অধ্যুষিত সৈয়দপুর গ্রামে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানীতে গ্রামবাসীর মধ্য আতংক বিরাজ করছে। এখানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দাগী অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীরা নিরীহ লোকদের উপর গুলি
করে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে। এদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ। অভিযোগ রয়েছে ওই সন্ত্রাসী বাহিনীকে দীর্ঘ দিন ধরে পৃষ্টপোষকতা করছেন স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসান। তাদের বিরুদ্ধে থানায় রয়েছে একাধিক মামলা। সরেজমিন উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে গেলে এলাকাবাসী জানান, এরা অর্থ বিত্ত ও সরকারী দলের সাইন বোর্ড ব্যবহার করে অপরাধকর্ম করে ও পাড় পেয়ে যায়।
এদিকে সৈয়দপুর গ্রামে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সৈয়দ জামাল মিয়া ( ৩৮) হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখনও ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি ব্যবহৃত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। নিহত সৈয়দ জামাল মিয়ার পিতা আনহার মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার নিরপরাধ ছেলেকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে নির্মম ভাবে হত্যা করলো। তার দুটি অবুঝ শিশু বাবা বাবা বলে চিৎকার করে কাঁদছে। তাদেরকে কিভাবে শান্তনা দেবো? তিনি অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।
এদিকে জামাল মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ছোট ভাই হোসাইন মিয়া বাদী হয়ে সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসান সহ ৫ জন কে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার প্রায় দু‘সপ্তাহ অতিবাহিত হলে ও পুলিশ এ রির্পোট লিখা পর্যন্ত (১৩ মে) খুনিদের গ্রেফতার ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানূর রহমান বলেন, মামলা রেকর্ডের পর থেকে আসামীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। আসামীরা গা ঢাকা দিলেও রেহাই পাবে না। তাদের ধরতে আমাদের কয়েকটি টিম কাজ করছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকতা সাবইন্সপেক্টর জিন্নাত আলী জানান, ইতিমধ্যে একাধিক স্হানে অভিযান পরিচালনা করেছি কিন্তু আসামীদের ধরতে পারছি না। তবে খুব দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।
সৈয়দ পুর গ্রামের সৈয়দ শাহান মিয়া বলেন, সৈয়দপুর এখন অস্ত্রের কারখানা, এখানে অস্ত্রের ঝনঝনানীতে আমরা আতংকগ্রস্হ হয়ে পড়েছি। আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই।
সৈয়দ তায়েফ আহমদ বলেন, এখানে তুচ্ছ বিষয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি করে। সন্ত্রাসীদের গডফাদার হচ্ছেন চেয়ারম্যান আবুল হাসান। আধিপত্য বিস্তার করতে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে সন্ত্রাসীদের পৃষ্টপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা প্রয়োজন।
সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলার সৈয়দপুর (ইশানকোনা) গ্রামে ২৮ এপ্রিল রাত প্রায় ৯টার দিকে দু‘পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সৈয়দপুর (ইশানকোনা) গ্রামের সৈয়দ আনহার মিয়ার ছেলে সৈয়দ জামাল মিয়া অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় জামাল মিয়ার মৃত্যু হয়।
জানা যায়, আনহার মিয়ার ছেলে হোসাইন মিয়ার সাথে সৈয়দপুর বাজারে একই এলাকার সৈয়দ হুসবান নূরের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে সন্ধার দিকে হোসাইন মিয়াকে প্রতিপক্ষের লোক জন মারপিট করে। পরে স্হানীয় পোষ্ট অফিস সংলগ্ন সড়কে
হোসাইন মিয়ার লোক জন ও সৈয়দ হুসবান নূরের নেতৃত্বে তার লোক জন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রতিপক্ষ বন্দুক দিয়ে এলোপাতাড়ী গুলি করলে হোসাইন মিয়ার বড়ভাই জামাল মিয়া বুকে গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সহ কম পক্ষে ১৫ জন আহত হন। গুরুতর আহতদের সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহতের চাচা গুলিবিদ্ধ সৈয়দ আমিন মিয়া বলেন, আমি মধ্যস্থতা করে আমার লোকদের বাড়ীতে নিয়ে আসতে চাইছিলাম এসময় আমাদের লক্ষ্য করে হুসবান নূর এলোপাতাড়ী গুলি করতে থাকে। আমার ভাতিজা জামালকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয়। আমি ও আমার ভাই সহ আমাদের সবার উপর গুলি করে ত্রাসের সৃষ্টি করে।
Leave a Reply